দেশে বিদ্যমান আয়কর আইনের নানামুখী ফাঁক গলে বহুজাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সুকৌশলে বড় অঙ্কের কর ফাঁকি দিচ্ছে। ফলে দেশের কর কাক্ষিত মাত্রায় বাড়াতে পারছে না সরকার।
অ্যাকশন এইডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে কর্পোরেট কর বাড়াতে একশনএইড ৮ দফা সুপারিশও তুলে ধরে।
রবিবার ( ৩ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশে অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশে বর্তমানে জিডিপিতে রাজস্বের অবদান মাত্র ১১ শতাংশ। অথচ এটি অন্ততপক্ষে ১৬ শতাংশ হওয়া উচিত। পুরোনো আইন- নীতি, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে তাদের মধ্যে কর দেয়ার ভাল প্রবণতা তৈরি হয়নি। বাংলাদেশে আয় করে কর ফাঁকি দিয়ে ওই অর্থ নিয়ে যায় কোম্পানির মূল দেশে।
তারা বলেন, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর করের আওতা বাড়ানো গেলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের মত মৌলিক বিষয়ে সামাজিক বিনিয়োগ বাড়ানো যাবে। নাগরিক সুবিধা বাড়াতে করের আওতা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন নিয়ম নীতি প্রয়োজন। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর প্রদানে আরো দায়বদ্ধ হতে হবে।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা গরীব দেশ ছিলাম বিধায় বিদেশী বড় কোম্পানীগুলোকে এদেশে বিনিয়োগ করতে ডেকে নিয়ে আসতে হয়েছে। তাদেরকে তাই সুযোগ সুবিধা দিতে হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলো চতুরতার সঙ্গে কর সুবিধা নিয়েছে। তবে ফাকফোঁকর খুঁজে বের করতে আমরা কাজ করছি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে অবস্থিত ডেনমার্ক দূতাবাসের কাউন্সিলর পিটার বগ জেনসেন বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচাইতে কম কর প্রদানকারী দেশ। বাংলাদেশের কাতারে থাকা কেনিয়া, সিয়েরালিয়নেও বাংলাদেশের তুলনায় বেশি কর আদায় হয়।
তিনি বলেন, এদেশে কর ফাঁকির প্রবণতা অনেক বেশি। কম ট্যাক্স আদায় হওয়ায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মত বিষয়ে কম খেয়াল দিতে পারের সরকার।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, বিদ্যমান আইন, বিদেশে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের প্রভাবের কারণে প্রযোজ্য হারে কর দেয়না আমাদের দেশের বহুজাতি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে এ দেশের আয় চলে যায় অন্য দেশে। এজন্য আমাদের ট্যাক্স ন্যায্যতা তৈরি করতে হবে। যুগোপোযুগি করতে হবে কর আইনগুলোকে।
আপনার মন্তব্য লিখুন