পুঁজিবাজারে বড়পতন, দিশেহারা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা

মার্কেট ট্রেন্ড বিডিডটকম রিপোর্ট
রবিবার , ১১ মার্চ ২০১৮

দেশের দুই পুঁজিবাজারে আজ রবিবার মূল্য সূচকের ব্যাপক দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। পুঁজিবাজারের এ নাজুক পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কি কারণে বাজারের এ করুণ দশা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ মূল্য সূচকের ব্যাপক পতনের পাশাপাশি লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও একই চিত্র।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, রবিবার ডিএসইতে ২৩৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে প্রায় ৩৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা কম। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২৭৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আজকের এই লেনদেন গত ২০ মাসের মধ্যে কম। এর আগে ২০১৬ সালের ১০ জুলাই ২০৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল।

আজ লেনদেন শুরুর পর থেকেই সূচক কমতে থাকে, যা দিনের লেনদেনের শেষ পর্যন্ত ছিল। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৩টির, কমেছে ২৪৬টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টি কোম্পানির শেয়ার দর।

ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ৫৪ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে  ২ হাজার ১২৬ পয়েন্টে।

অন্যদিকে আজ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১২ কোটি ৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭ হাজার ৮৭৫ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২২১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ১৬৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির শেয়ার দর।

এদিকে গত কিছুদিন ধরে পুঁজিবাজারের এ নাজুক পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। এ অবস্থায় তারা কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। অথচ প্রতিদিনই লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে।

বিনিয়োগকারী চন্দন চৌধুরী বলেন, ২০১০ সালের ধ্বসে পুরোপুরি পথে বসে গিয়েছিলাম। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আর কোনদিন শেয়ারবাজারমুখী হবো না। কিন্তু পরে আবার জমানো টাকা নিয়ে নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। কে জানে শেয়ারবাজারের আবার এ অবস্থা হবে।

তিনি বলেন, কেন এমন হচ্ছে তাওতো বুঝতে পারছি না। ভালো শেয়ার কিনেওতো পুঁজি ধরে রাখতে পারছি না।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত বছরের শেষ দিনে ডিএসইর সূচক ছিল ছয় হাজার ২৪৪ পয়েন্ট। এরপর নতুন বছরের শুরু থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডিএসইর প্রধান সূচকের পতন হয়েছে ৪১২ পয়েন্ট। মাঝে বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও তা স্থায়ী হয়নি। আজ ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ৫৪ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অথচ নতুন বছরে বাজার ভালো হবে এমন প্রত্যাশা ছিল বিনিয়োগকারীদের।

বিনিয়োগকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজার কেন এমন হচ্ছে তা নিয়ন্ত্রক সংস্থার জোরালোভাবে দেখা উচিত। কেউ বাজার নিয়ে খেলছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে।