ক্রেতা সংকটে অনেকদিন ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে থাকা পুঁজিবাজারে খাদ্য খাতে তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠান ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১৪ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ২৫ টাকা ৯০ পয়সা। আর আজ সোমবার প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ ১৪ কার্যদিবসের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা ৭০ পয়সা বা ৬০.৬১ শতাংশ।
ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ারের এই অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। জবাবে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কোনো প্রকার মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর বাড়ছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, ক্রেতা সংকটে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসে (২৩ টাকা ৫০ পয়সায়) আটকে ছিল। চলতি বছরের জুনে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের বড় অংকের লেনদেন হতে শুরু করে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ফ্লোরপ্রাইস থেকে উঠে আসে।
গত ২ জুলাই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিলো ২৩ টাকা ৫০ পয়সা। সেখান থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪২ টাকা ৯০ পয়সায় উঠে। সেসময় মাত্র নয় কার্যদিবসে প্রতিটি শেয়ারের দাম বাড়ে ১৯ টাকা ৪০ পয়সা বা ৮২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
পরে আবার প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর কমতে কমতে ২৫ টাকা ৯০ পয়সায় চলে আসে। এখন আবার প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর বাড়ছে। গত সপ্তাহে প্রতিটি কার্যদিবসেই টাকার অংকে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির ২২৫ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রায় দেড় বছর আগেও ফু-ওয়াং ফুডসকে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান কিনে নিচ্ছে-এমন গুজবে হু হু করে বাড়তে থাকে এর শেয়ারদর। পরে এটি গুজব বলে বলে প্রমাণিত হয়।
নতুন করে আবার প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ফু-ওয়াং ফুডসের কোম্পানি সচিব মো: শরিফ আল মাহমুদ বলেন, কি কারণে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে আমরা তা জানি না। শেয়ারদর বাড়ার কোন কারণ নেই। ডিএসইকে আমরা তা জানিয়েও দিয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে মিনোরি বাংলাদেশ ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ার কিনছে-এমন গুজবে প্রতিষ্ঠানটির দাম বেড়েছিল। এখন আবার দাম কেন বাড়ছে তা আমাদের জানা নেই।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে অনেক বিনিয়োগকারী গুজবের পেছনে ছুটে। জেনে-বুঝে কম বিনিয়োগকারী শেয়ার কিনেন। তাই, আবারও বলবো, ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোন কারণ নেই।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত ‘বি’ ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধিত মূলধন ১১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৮ লাখ ৩৯ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে ৮৫ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ শেয়ার আছে বিদেশিদের কাছে। আর মাত্র ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে।
সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ১৭ পয়সা।
আপনার মন্তব্য লিখুন