ব্র্যাক ব্যাংকে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছেই

মার্কেট ট্রেন্ড বিডিডটকম রিপোর্ট
মঙ্গলবার , ১৫ আগস্ট ২০১৭

পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত ব্র্যাক ব্যাংকে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছেই। গত এক মাসের ব্যবধানে ব্যাংকটিতে বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ( ডিএসই)-এর ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চলতি বছরের ৩০ জুন ব্যাংকটিতে বিদেশী বিনিয়োগ ছিল ৪২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৯৩ শতাংশ।গত বছর ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংকটিতে বিদেশী বিনিয়োগ ছিল ৪২ দশমিক ১৫ শতাংশ।

বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের পরিমানও।চলতি বছরের ৩০ জুন ব্যাংকটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২৭ শতাংশে।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির মোট ৭১ কোটি ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৯১০টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যেক্তা/পরিচালকদের কাছে ৫০ দশমিক শূণ্য ১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারিদের কাছে ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারিদের কাছে ৪৩ দশমিক ৬২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারিদের কাছে কোন শেয়ার নেই।

কিন্তু প্রায় তিন বছরের মধ্যে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত কোম্পানিটির ৪২ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার কিনেছে বিদেশী বিনিয়োগকারিরা। এ সময়ের ব্যবধানে সাধারণ বিনিয়োগকারিরা তাদের হাতে থাকা অধিকাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন।

তবে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ সমাপ্ত হিসেব বছরে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি ২০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয়ায় ব্যাংকটিতে শেয়ারের সংখ্যা বেড়েছে।

বতমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ারসংখ্যা ৮৫ কোটি ৫২ লাখ ৫ হাজার ৬৯৪টি। এরমধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে ৪৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪২ দশমিক ৯৩ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বাকি ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

গত ৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার ব্র্যাক ব্যাংকের ‘অর্ধবার্ষিক আর্থিক ফলাফল’ প্রকাশ করা হয়। এ উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেছেন, ‘প্রতিযোগিমূলক পরিবেশ সত্ত্বেও আমরা ভালো ফলাফল অর্জন করেছি। এজন্য আমরা আনন্দিত। ব্র্যাক ব্যাংক ২০১৬ সালে অর্জিত প্রবৃদ্ধির গতিশীলতা অব্যাহত রেখেছে এবং দেশের সেরা ব্যাংক হবার অগ্রযাত্রায় দৃঢ়ভাবে এগিয়ে চলেছে।’

সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ব্র্যাক ব্যাংক ২৪২ কোটি ১০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। মুনাফার এই পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি।

দেশের পুঁজিবাজারে ২০০৭ সালে তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির এই ব্যাংকটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে ১৭৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা মুনাফা করেছিল।

অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বিশ্লেষক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি ইন্টারনেটে সারসরি সম্প্রচার করা হয়, তাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরাসরি প্রশ্ন করার সুযোগ পান।

ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাদের জোয়াদ্দার এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নেট এসেট ভ্যালু হয়েছে ২৭ টাকা ৮৬ পয়সা, যা গত বছরে জানুয়ারি-জুন সময়ে ছিল ২৬ টাকা ১৫ পয়সা। এবার শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৬৬ পয়সা। ২০১৬ সালের একই সময়ে আয় ছিল ২ টাকা ১০ পয়সা।

বেসরকারি খাতের এই ব্যাংকটি বর্তমানে ১৮৬টি শাখা, ৪৬০টি এটিএম এবং ৪৪৮টি এসএমই ইউনিট অফিস এবং ৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি জনবল নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা ১৫ লাখের বেশী।

গত রবিবার ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বশেষ ৮৪ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর ছিল ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ৫৮ টাকা ৩০ পয়সা।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ১৫ দশমিক ৩৭, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ১৫ দশমিক ৮১।

ব্যাংক খাতের এ কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ২’শ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৮৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৮৫৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা।