দেশীয় পাটকলগুলোতে প্রয়োজনীয় পাট যোগানের পাশাপাশি পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইনের পুরোপুরি বাস্তবায়নে কাঁচাপাট রপ্তানি এক মাসের জন্য বন্ধ করেছে সরকার। আজ মঙ্গলবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
সোমবার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ এর সঠিক বাস্তবায়নে পাট অধ্যাদেশ ১৯৬২-এর ৪ ও ১৩ ধারা মোতাবেক ৩ নভেম্বর থেকে এক মাস পর্যন্ত সকল প্রকার কাচাঁপাট রপ্তানী বন্ধ রাখা হল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ভারতে এবার পাটের উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে সেদেশের আমদানিকারকরা মৌসুমের শুরু থেকেই বাংলাদেশ থেকে পাট কিনছিল। এছাড়া দেশীয় মজুদদাররা বিপুল পরিমান কাঁচাপাট মজুদ করার ফলে চাহিদামতো পাটের যোগানে টান পড়ছিল। এর প্রভাব পড়েছে পাটের দামের উপর।
চলতি মৌসুমে প্রতি মণ কাঁচা পাট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। যা গত বছর ছিল মণ প্রতি ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা।
সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন কারণে পাটকলগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত। এরমধ্যে যদি কাঁচাপাটের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়তে থাকে তাহলে মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭ দশমিক ২৬ লাখ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ৭৫ লাখ বেল পাট উৎপাদিত হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৬৫ হাজার বেল বেশি। তবে চলতি অর্থবছরে দেশে কত পাট উৎপাদন হয়েছে তার হিসাব এখনো চ‚ড়ান্ত হয়নি।
বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্র জানায়, প্রতি বছর উৎপাদিত পাটের মধ্যে ১৫ থেকে ১৮ লাখ বেল কাঁচা পাট রপ্তানি করা হয়। ৪০ থেকে ৪৫ লাখ বেল পাট দেশের সরকারি ও বেসরকারি জুট মিলগুলোতে পাটজাত পণ্য তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। হস্তশিল্পের জন্য ব্যবহার হয় ২ থেকে তিন লাখ বেল পাট। এছাড়া প্রায় ১৫ লাখ বেল পাট কৃষক ও ব্যবসায়ীদের গুদামে থাকে।
এদিকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বলেছে, আগামি ডিসেম্বর থেকে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন পুরোপুরি কার্যকর করা হবে। এতে দেশে পাটের বস্তা ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বহুগুনে বেড়ে যাবে। ফলে প্রয়োজনীয় পাটের যোগান দিতেই কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে।
কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ
সোমবার , ০২ নভেম্বর ২০১৫
আপনার মন্তব্য লিখুন