শেয়ার লেনদেনে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি ফি কমানো হচ্ছে। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ও বাজারের সার্বিক দিক বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া কমানো হতে পারে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের বার্ষিক ফিও।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ডিপোজিটরি প্রবিধানমালার খসড়া সংশোধনী অনুমোদন করা হয়েছে। জনমত জরিপ শেষে সংশোধনীটি চূড়ান্ত করা হবে। এদিকে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, যে হারে সিডিবিএল (সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড) ফি কমানো হচ্ছে তাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা খুব একটা উপকৃত হবেন না।
একাধিক ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী ফি কমানোর পরিমাণ এতই কম যে, তা ব্রোকারেজ ফি কমানোর মতো যথেষ্ট নয়। তবে বড় অঙ্কের ট্রেজারি বন্ড, ইটিএফ এবং স্বল্প মূলধনী বাজারভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচায় সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা মনে করছেন, নতুন আইন অনুযায়ী সিডিবিএল ফি কমানোর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের লেনদেন ফি কমানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিও হিসাবের বার্ষিক ফি কমানোর ফলে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি উপকৃত হবেন।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন সংশোধনী প্রস্তাবে শেয়ারসহ নানা ইন্সট্রুমেন্টের ক্ষেত্রে ছয়টি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। এগুলো হলো- ইক্যুইটি (শেয়ার), স্বল্প মূলধনী কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত পৃথক মার্কেটভুক্ত কোম্পানির শেয়ার, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ), করপোরেট বন্ড, বেমেয়াদি (ওপেন অ্যান্ড) মিউচুয়াল ফান্ড।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ডসহ সব ধরনের সিকিউরিটিজ ক্রয় ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সিডিবিএল ফি প্রতি লাখ টাকায় ১৫ টাকা। কোম্পানির শেয়ার ও মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচায় এ হার অর্ধেক কমিয়ে সাড়ে ১২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংশোধনী প্রস্তাব অনুযায়ী স্বল্প মূলধনী কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত পৃথক মার্কেটভুক্ত কোম্পানির প্রতি এক লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচায় সিডিবিএল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ টাকা। এ ছাড়া প্রতি লাখ টাকা মূল্যের বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেনে সিডিবিএল ফি ১৫ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আর সরকারি সিকিউরিটিজ (ট্রেজারি বন্ড, বিল বন্ড ইত্যাদি) কেনাবেচায় প্রতি লেনদেনে ১০ টাকা এবং করপোরেট বন্ড কেনাবেচায় প্রতি লেনদেনে ২৫ টাকা সিডিবিএল ফি প্রস্তাব করা হয়েছে। জানা গেছে, শেয়ারসহ অন্যান্য সিকিউরিটিজে বর্তমানে প্রতি লেনদেনে সিডিবিএলের ন্যূনতম ফি ৫ টাকা নির্ধারণ করা আছে। প্রস্তাবিত আইনে ন্যূনতম ফির শর্তটি প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণে সিডিবিএল বার্ষিক ৫০০ টাকা ফি হিসেবে নেয়। খসড়া সংশোধনীতে ৫০ টাকা কমিয়ে ৪৫০ টাকায় নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার ২০০ টাকা, সিডিবিএল ১০০ টাকা, সংশ্লিষ্ট ডিপি ১০০ টাকা ও বিএসইসি ৫০ টাকা পাবে। আগে বিও হিসাবের বার্ষিক ফি থেকে সিডিবিএল পেত ১৫০ টাকা।
আপনার মন্তব্য লিখুন