চলতি অর্থবছরের ছয় মাসের (জানুয়ারি-জুন) জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলনকক্ষে বৃহস্পতিবার ( ১৪ জানুয়ারি)এই মুদ্রানীতি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন গভর্নর আতিউর রহমান ।
এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, আবুল কাসেম, আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান; প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল, জ্যেষ্ঠ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ফয়সাল আহমেদ ও নির্বাহী পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন মুদ্রানীতিতে নীতি সুদের হার কমানো হয়েছে। এতে ব্যাংক খাতে ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা বাড়বে। তবে মূল্যস্ফীতি যাতে না বাড়ে, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক থাকবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিতে পরিবর্তন আনবে।
গভর্নর বলেন, মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি জুনের ১৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে বেড়ে নভেম্বরে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে। আমানত-ঋণের সুদের হার কমেছে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে অর্থবছর শেষে এই হার ৭ শতাংশও স্পর্শ করতে পারে।
এদিকে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের জন্য যথেষ্ট প্রণোদনা রয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল। তিনি বলেন, নীতি সুদহার বলে পরিচিত রেপো ও রিভার্স রেপোর হার কমানোর ফলে শেয়ারবাজার চাঙ্গা হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, শেয়ারবাজারের দায়-দায়িত্ব সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংক নেয় না। ওয়াল স্ট্রিটের দায়িত্ব ফেডারেল রিজার্ভ নেয়নি। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি শেয়ারবাজারকে সরাসরি প্রভাবিত করে। তাই তা বিবেচনা করেই নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের নীতিগুলো শেয়ারবাজারকে উজ্জীবিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, কিছুদিন আগে মিউচুয়াল ফান্ডে ব্যাংকের বিনিয়োগের প্রভিশন সংরক্ষণ নীতিমালা সহজ করা হয়েছে। এতে বাজারে স্বাচ্ছন্দ্যভাব ফিরে এসেছে। তাছাড়া বিকল্প বিনিয়োগ তহবিল বা সমজাতীয় তহবিলে ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসাব থেকে আলাদা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত মূলধনী ঋণ পুঁজিবাজার বিনিয়োগের হিসাবায়নের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। এর ফলে পুঁজিবাজার ব্যাংকের বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ডেপুটি গভর্নর বলেন, এ তিনটি সুবিধা দেয়ার ফলে আগামী জুনের মধ্যে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমার মধ্যে নিয়ে আসার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা অনেকটাই পূরণ হয়েছে। দুয়েকটি ব্যাংক ছাড়া বাকিগুলোর বিনিয়োগ জুনের মধ্যেই নির্ধারিত সীমায় চলে আসছে। একই সাথে ব্যাংকের নতুন বিনিয়োগের সুযোগও তৈরি হয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন